অঙ্কুর রায়


অঙ্কুর রায় - 
কবি একজন ইংরাজি সাহিত্যের শিক্ষক। সাহিত্য চর্চা কলেজের সময় থেকেই। মুলত কবিতা, ছড়া, লিমেরিক লিখতে পছন্দ করেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সাথে যুক্ত এবং এই পত্রিকারও যুগ্ম-সম্পাদক উনি ।







রাই কিশোরী জানো ? 

- অঙ্কুর রায়  

 সেদিন যখন
 তোমার আমার
 হয়েছিল দেখা,
 অনেক ভিড়
তবু তোমায়
 পেয়েছিলাম একা ।


 মেঘলা দুপুর 
সাক্ষী ছিল 
শরত রোদ 
পড়েছিল 
তোমার আমার মুখে, 
অনেক কথা 
হয়েছিল ,
অনেক কথা
চোখে ছিল ,
 তবুও মন
ভরেছিল - 
 গভীরতম সূখে।


 মেঘলা দুপুর
সাক্ষী ছিল
 বসন্ত এসেছিল
 তোমায় আমায় দেখে,
 তোমায় একটু
ছুঁয়েছিলাম ,
তোমার চোখে
হারিয়েছিলাম 
গহনতম দুখে ।।
---------------------------------------- 








জীবনপ্রেম 
 --অঙ্কুর রায়


 জানিনা জীবনে প্রেম কতবার আসে ।
বারেবারে আসে
ফিরে ফিরে আসে
শিরশিরে হাওয়ার মতো আসে । 
প্রেম -ঝাউপাতা।


 জানিনা জীবনে প্রেম কতবার আসে ।
একবারই আসে 
চম্পক সুবাসে 
শারদ রোদের মত হাসে।
প্রেম -স্বর্ণলতা ।

 যদিনা জীবনে প্রেম কোনদিন আসে ? 
নীরবে নিভৃতে সে 
ঊষার আলোয় ভেসে 
পৃথিবীতে জীবনের মত আসে । 
প্রেম -অপরাজিতা ।


জীবনে সে অলৌকিক একবারই
আসে 
বসন্ত গন্ধ প্রেম বাঁধা পরে অস্তিত্বের
পাশে ।
-----------------------------------------------------------------------------------------


মেঘসন্ধ্যা আসে
  - অঙ্কুর রায় 


মেঘলা দিনের শেষে
মেঘসন্ধ্যা আসে ।
কে যে কখন কোন মেঘে ভাসে  ?
কে কেন সিক্ত হয় কোন বাতাসে  ?

মন খারাপের
মেঘদুপুরে
স্মৃতি থৈ থৈ
মন পুকুরে
যেই দিয়েছি ডুব  !
                     চুপ ।

চলকে ওঠে
কান্না হাসি
কে যে বাজায়
করুণ বাঁশি
শিউলি ঝরে
রাশি রাশি
অশ্রু ঝরে টুপ !
                  চুপ ।

মলিন আলোর
মায়ায় মায়ায়  --
মেঘসন্ধ্যা আসে ।

সহসা বাহিরে
অঝোর ধারায়
মেদুর মেঘেরা ঝরে ।
ওদেরও কি অতীত ঘিরে ধরে  ?
ভিজবো না আর
মেঘসন্ধ্যার
আকুল বরিষণে  ।

ভেজার জন্যে বৃষ্টি লাগে নাকি  ?
--------------------------------------------------------------------------------------------


বৃষ্টি ভেজা পদ্য  
- অঙ্কুর রায় 
বাহির মেঘের অঝোর ধারায়
ভিজতে পারো তুমি -
ঝর্ণা তুমি হতেই পারো,
হতেই পারো নদী ।
          শুধু
আকাশতলায় দাঁড়াও এসে যদি ।

ভিতর মেঘের অশ্রুধারায়
ভিজবে যখন তুমি -
ঝর্ণা তুমি হতেই পারো,
হতেই পারো নদী ।
           শুধু
চোখের তারায় মেঘের ছায়া
সরাতে পারো যদি ।
-------------------------------------------------------------------------------------------


আজ বাংলা 
 -- অঙ্কুর রায়
রূপোর কাঠির ছোঁয়া  বুঝি
লাগল তোমার চোখে ,
কেমন তুমি জেগে  আছ
দেখেও না দেখে ।

বাউল গানের বাংলা আমার
ভাটিয়ালির দেশ -
ভাওয়াইয়া, জারি,সারি
মুর্শিদা, দরবেশ।

সুরের রেশ মুছে দিল
তীক্ষ্ণ আর্তরব ,
ক্ষোভের পরে ক্রোধ জমেছে
শবের উপর শব ।

স্বর্গাদপি গরিয়সীর
আঁচল ফালাফালা
কামুক পিশাচ নখ আঁচড়ে
বিষের বড় জ্বালা ।

সোনার কাঠি কোথায় পাব
রূপকথাতো নয়
ক্রোধতপ্ত লৌহশলায়
ভয়কে কর জয়।
------------------------------------------------------------------------------------------



বন্দর  
-অঙ্কুর রায় 

হাজার বছর আরও পার হয়ে গেছে  ভেসে ভেসে ......
সেদিন তোমার পাখির নীড়ের মত চোখে 
পেয়েছিলাম দুদণ্ড শান্তির খোঁজ ।
তারপর আশ্রয়ের খোঁজে আবার 
পড়েছিলাম ভেসে অনিশ্চিত যাত্রায়  .....
সহস্র বৎসর ধরে উত্তাল তরঙ্গের সাথে 
যুদ্ধ করতে করতে, 
লোনা হাওয়ায় ক্ষয়ে যেতে যেতে, 
এ দ্বীপে ও দ্বীপে শান্তি না পেয়ে পেয়ে, 
আবারও পেলাম তোমায় - বনলতা সেন ।
বললে  'কোথাও কি ভালোবাসা পেলেন ?'


আজ শান্তি খুঁজিনি চোখে, 
সোজা নোঙর ফেলেছি বুকে ।
ও চোখে আছে অনেক আলো ছায়া, 
ক্লান্ত নাবিক - চোখের মরীচিকা মায়া ।


এ বন্দরই ছিল তো গন্তব্য, 
শুধু ঠিকানা ছিল না জানা তাই 
পথে হল অনর্থক দেরি ।

------------------------------------------------------------------------------------------

ছিঃ
 - অঙ্কুর রায়

সমাজ   : পোশাকে তোমার 
                উত্তেজনা ছিল, 
                অশালীন ছিল 
                 হাবভাব ।
                 পৌরুষ তাই
                 জিগীষার  বশে 
                 দিয়েছিল  বাঘ ঝাঁপ ।


নির্যাতিতা : সে কী  ?
                  নারীর দিকে 
                  গভীর তাকাও দেখি  -
                  রোজ প্রতিদিন 
                  এই অশালীন 
                  আচরণই করে, 
                  মা, বোন,  বউ 
                  সবার ঘরে ঘরে ! 



বিবেক  :    ছিঃ ।
                পৌরুষ জানি 
                জাগ্রত হয়
                নারীত্ব উদ্বোধনে ।
                পৌরুষ নয় 
                স্বাভিমান লুঠ,
                 শ্বাপদ আক্রমণে ।
                পুরুষের তবে 
                মানুষ হওয়া 
                রয়েই গেল বাকি? 
               কাব্য, গীতি, 
                মুগ্ধ প্রণতি 
                সবই ফাঁকা, ফাঁকি  ?
                 ছিঃ।